নিউইয়র্ক : | বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
নিউইয়র্কে উপমহাদেশের বাংলা চলচ্চিত্রের মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের ৯৩তম জন্মদিন উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী (২০ ও ২১ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ২০ এপ্রিল শনিবার সকালে নিউ ইয়র্কের জ্যমাইকা পারফরমিং আর্টস সেন্টারে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন চিত্রনায়ক ও সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ। শনিবার সকাল ১১টা থেকে চলচ্চিত্র প্রদর্শনী শুরু হয়।
বাংলাদেশ ও ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক, নায়িকা এবং আমন্ত্রিত অতিথিরা একসঙ্গে বসে বিভিন্ন ছবি উপভোগ করেন। দুই দিনের এ উৎসবে বিনামূল্যে দেখানো হবে বাংলাদেশ ও ভারতের ৩৯টি চলচ্চিত্র প্র দর্শন করা হবে বলে জানা গেছে। দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক এ চলচ্চিত্র উৎসবের আয়োজন করেন সুচিত্রা সেন মেমোরিয়াল, ইউএসএ নামের একটি সংগঠন।
আয়োজকরা জানান, বাংলাদেশের পাবনা জেলার মেয়ে সুচিত্রা সেনের বাংলা চলচ্চিত্রের অবদানকে পৃথিবীময় ছড়িয়ে দিতে তাঁর ৯৩তম জন্মদিন উপলক্ষে দুই দিনব্যাপী এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। বাঙালি সংস্কৃতি এবং চলচ্চিত্রের জন্য সুচিত্রা সেনের অবদানকে নতুন প্রজন্মের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়াই এ আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য। ভারত ও বাংলাদেশেসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ৪০৯টি ছবি অনুষ্ঠানে প্রদর্শনের জন্য জমা পড়লেও তার মধ্যে থেকে বিচারকমণ্ডলীর মাধ্যমে ৩৯টি ছবি প্রদর্শনের জন্য বাছাই করেন। এ উৎসবে কোনো প্রবেশ মুল্য নেই বলে জানান আয়োজকরা।
২০ এপ্রিলের এ উৎসবে চিত্রনায়ক ও সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ ছাড়াও চঞ্চল চৌধুরী, বাঁধন, জয়, ভারতের ঋতুপর্ণা সেন, রেশমি মিত্রসহ শতাধিক চিত্রনায়ক নায়িকা, পরিচালকসহ সিনেমাপ্রেমীরা উপস্থি ছিলেন।
এদিকে জ্যামাইকা পারফরমিং আর্টস সেন্টারে দুদিনব্যাপী এ উৎসবের শেষ দিন রোববার বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে অ্যাওয়ার্ডস প্রদান করা হয়। এতে বাংলাদেশ, ভারত ও এই দুই দেশের অভিবাসী ক্যাটাগরিতে ৩১টি পুরস্কার দেওয়া হয়। শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পুরস্কার পায় হাওয়া (বাংলাদেশ), দোআঁশ (ভারত) ও রেডিও (অভিবাসী)। উৎসবে সুচিত্রা সেন অনারারি অ্যাওয়ার্ডস তুলে দেওয়া হয় বাংলাদেশের অভিনয় শিল্পী নায়ক ফেরদৌস আহমেদ, ভারতীয় নায়িকা ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তা ও চিত্র পরিচালক রেশমী মিত্রের হাতে। এছাড়াও শ্রেষ্ঠ পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমন (হাওয়া-বাংলাদেশ) ও সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় (দোআঁশ-ভারত) এবং শ্রেষ্ঠ ডেব্যু পরিচালক হন যথাক্রমে হৃদি হক (১৯৭১: সেইসব দিন-বাংলাদেশ) ও অভিজিৎ শ্রীদাস (বিজয়ার পরে-ভারত)।
শ্রেষ্ঠ অভিনয়শিল্পীর (পূরুষ-বাংলাদেশ) চঞ্চল চৌধুরী, যৌথভাবে প্রসেনজিত ও কৌশিক গাঙ্গুলি (ভারত) ও রাজুব ভৌমিক (অভিবাসী)। শ্রেষ্ঠ অভিনয়শিল্পী (নারী-বাংলাদেশ) নির্বাচিত হন নাজিফা তুষি (বাংলাদেশ), পায়েল সরকার (ভারত) ও সিন্ডি রোলিং (অভিবাসী)। শ্রেষ্ঠ সিনেমাটোগ্রাফারের পুরস্কার পান কামরুল হাসান খসরু (বাংলাদেশ) ও শুভজিৎ রায় (ভারত)।
উৎসবে শর্ট ফিল্ম ছুরত ও দ্যা ক্যাট (বাংলাদেশ), তৃতীয় রিপু ও রজনীগন্ধা (ভারত) এবং লাইট ক্যামেরা মেগা! (অভিবাসী) পুরস্কার পায়। ডক্যুফিল্ম-এ পুরস্কার পায় নানজিবা খানের দি আন ওয়ান্টেড টুইন (বাংলাদেশ), বাউল: সউল অব বেঙ্গল (ভারত) ও ড. নূরুন নবী: একজন আজীবন মুক্তিযোদ্ধা (অভিবাসী)। শিশুতোষ চলচ্চিত্র মাইক (বাংলাদেশ) ও মানিক কাকুর ক্যামেরা (ভারত)। পপুলার ক্যাটাগরিতে প্রিয়তমা ছবিতে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ শিল্পী (পূরুষ) শাকিব খান ও সুরঙ্গ ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনয় শিল্পী (নারী) নির্বাচিত হন তমা মির্জা।উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল ছিলো সুচিত্রা সেনের জন্মদিন। ১৯৩১ সালের এই দিনে পাবনা জেলায় জন্ম নেন তিনি। নয় ভাইবোনের মধ্যে সুচিত্রা ছিলেন পঞ্চম।
বাড়ির ছোটরা ডাকতেন রাঙাদি বলে। মা-বাবা নাম রেখেছিলেন রমা। পরিচালক সুকুমার দাশগুপ্তের সহকারী নীতীশ রায় তা বদলে রাখেন সুচিত্রা। কিন্তু পাবনার মহাকালী পাঠশালায় খাতায় কলমে তাঁর নাম ছিল কৃষ্ণা দাশগুপ্ত। মহাকালী পাঠশালায় পড়ালেখা শেষ করে সুচিত্রা সেন স্থানীয় পাবনা বালিকা বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেন।উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নেয়া সুচিত্রা সেন ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের ক’মাস আগে বাবা করুণাময় পাবনার বাড়ি-ঘর, চাকরি সবকিছু ফেলে সপরিবারে ভারত চলে যান।
Posted ১২:৩৬ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh